বিশেষ প্রতিনিধি :
গ্রীষ্মের সীমাহীন খরতাপে জমিন পুড়ে ছারখার! ভ্যাপসা অসহ্য গরম ও তাপদাহে সমস্ত প্রাণীকূলের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা! রোজা রমজানের মাসে এই বৈরি আবহাওয়ায় রোজাদারদের রোজা রাখাটাও বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, বিগত বর্ষা মৌসুমের পর থেকে বৃষ্টির কোন দেখা নেই! দীর্ঘ অনাবৃষ্টি ও খরার কবলে সারাদেশের ন্যায় ফেনীতেও সকল পথ-ঘাট, মাঠ-প্রান্তর, ফসলের ক্ষেত, বৃক্ষ, তরু-রাজি তীব্র তাপদাহে পুড়ছে। দাবানলের ন্যায় মাঠ-ঘাট পুড়ে জমিন হয়ে গেছে অনেকটা তামাটে। প্রায় সকল জলাধার শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হবার প্রায় উপক্রম।
অধিকাংশ পুকুর-ডোবা, ডিঘি, খাল-বিল, নদী-নালা পানি নেই! সেচযন্ত্র দ্বারা ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে কৃষি কাজে সেচ দিয়ে কৃষকরা এখন ফসল ফলাচ্ছে। সমস্ত কৃষি সেক্টর এখন সেচ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর সম্প্রতি অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় বেশিরভাগ গভীর, অগভীর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ায় সেচ কাজও অনেকাংশে ব্যহত হচ্ছে। তাই চাষাবাদের ক্ষেত্রে কৃষকরা পড়েছে মহাবিপাকে!
এদিকে বহু সুপেয় নদীর গভীর ও অগভীর নলকূপ দিয়ে এখন আর পানি উঠছে না। সুতরাং খাবার পানি ও জলের এবং গোসলের পানিও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রাম-গঞ্জ ও শহরে পানি ও জলের তীব্র সংকটে জনজীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে এসেছে। দীর্ঘ অনাবৃষ্টির দরুণ পুকুর-ডোবা শুকিয়ে পুকুরের তলদে ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে গ্রামীণ জনপদের মানুষকে এখন গোসল ও রান্নার পানির জন্য স্যালো ও টিউবওয়েলের পানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নেমে যাওয়ায় অনেক টিউবওয়েল ও স্যালো মেশিন অকেজো হয়ে পড়ায় সেগুলো দিয়ে এখন আর পানি উঠছে না।
জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ফেনীর দেয়া তথ্যমতে, ১৯৮০ সালের দিকে ফেনীতে ৬০ থেকে ৭০ ফুট গভীরে পানির স্তর পাওয়া যেতো। কিন্তু বর্তমানে ৫০০ থেকে ৭০০ ফুট গভীর ছাড়া পানি মিলছে না।
এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ফেনীতে রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হস্তচালিত নলকূপ। এর মধ্যে পানির স্থিতিতল নেমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে অচল ও বন্ধ হয়ে পড়ে ৫ হাজার নলকূপ। এতে ব্যবহার অনুপযোগী ও বিকল হয়ে পড়ে ৩০ শতাংশ নলকূপ।
ভুক্তভোগী মো. মফিজ উদ্দিন মুন্না বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। মাঠ-ঘাট, জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক শক্তিপ্রয়োগ করে পানির টিউবওয়েল চাপতে হয়। পানি উঠে অল্প-স্বল্প। অনেক দূর থেকে পানি এনে খেতে হয়।
এক গৃহবধূ জানান, রোজা রমজানের দিনে অনেক কষ্ট করে টিউবওয়েল (চাপা কল) বার বার চেপে পানি তুলতে হয়। অনেক বার চালওে পানি ঠিকমতো উঠছে না। পানির অভাবে তাদের গৃহস্থালির কাজ করতে দূর থেকে পানি এনে কাজ করতে হচ্ছে।
ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন শাকা জানান, প্রচন্ড খরা চলছে বর্তমানে। গভীর ও অগভীর নলকূপগুলো পানির সংকট। পানির অভাবে গ্রামের নি¤œ-মধ্যবিত্ত গৃহবধুরা গৃহস্থালির কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। কৃষকরা তাদের কৃষি জমিতে পানি দিতে পারছে না। এসব সমস্যার আশু সমাধানে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন।
জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ‘সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’ বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় জেলায় এবার ৪৩টি ইউনিয়নে ১১শ ৮টি নলকূপ বসানো হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে সাবমার্সিবল পাম্প সম্বলিত ২৬টি হস্তচালিত, গভীর ও অগভীর নলকূপ বসাবে সরকার।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » ফেনী বন্ধুসভার ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
- » ইঞ্জিনিয়ার এম. সাখাওয়াত খাঁন’র উদ্যোগে অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ
- » ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর ইফতার ও কমিটি পূণঃগঠন
- » চিপসের টাকা না দেওয়ায় চুরিকাঘাতে যুবক খুন
- » ফেনীতে ৬৬৫ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি
- » মনোয়ার হোসেন সেন্টুর সহযোগিতায় আরডিএস এর ইফতার
- » ফেনীতে প্রাইম ব্যাংক স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
- » ফেনীতে মন্দিরভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকদের তিন দিনের কর্মশালা উদ্বোধন
- » ফেনীতে আল্লাহ তাআলার ৯৯ টি নাম সম্বলিত ইসলামিক ভাস্কর্যের উদ্বোধন
- » ফেনীতে দেশের অন্যতম ব্র্যান্ড সেইলরের আউটলেট উদ্বোধন