** ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ উন্নীত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ **
সুরঞ্জিত নাগ :
দেশের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঝোঁক বাড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি খাতে কারিগরি শিক্ষার যথেষ্ট সম্প্রসারণ হয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে ৮ হাজার ৬৭৫টি কারগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এই
স্তরে শিক্ষার্থী বাড়ছে। সরকার ২০৩০ সালে মধ্যে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার হার ৩০ শতাংশ (মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে) উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। বর্তমানে এই হার প্রায় ২০ শতাংশ, যা ১০ বছর আগেও ছিল ২ শতাংশের মতো।
কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা
ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। এ ছাড়া বিএম, ভোকেশনাল, কৃষি ডিপ্লোমা রয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, যারা এসব কোর্স করছে, তাদের সহজেই কর্মসংস্থান হচ্ছে। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে ফারাক থাকলেও তাদের বেকার থাকতে হচ্ছে না।
উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের উন্নতিতে ডেল্টা প্ল্যান নির্ধারণ করেছেন সরকার। এই ডেল্টা প্ল্যান সঠিকভাবে বাস্তবায়নে দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।
দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হলে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত করা দরকার। এজন্য সরকার ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠায় প্রকল্প নিয়েছে। এর অধীনে একশটি উপজেলায় কলেজ নির্মাণ কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। ইতিমধ্যে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ৩৫টি টেকনিক্যাল স্কুল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
দেশের ৬৪টি জেলায় টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে। পরবর্তীতে এসব টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৭তলা ভিত বিশিষ্ট অত্যাধুনিক একটি করে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওয়ার্কসপ, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন, অধ্যক্ষের কক্ষ, মানসম্মত লাইব্রেরি, ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা কমনরুম ও স্যানেটারী ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও ভবনের উপরতলায় একটি হলরুম নির্মাণ করা হবে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ যে একটি উন্নয়ন মহাসড়কে আছে। বর্তমানে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি আগামীর প্রজন্মকে দক্ষমানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার শিক্ষাখাতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে তারই একটি অংশ।
কারিগরি শিক্ষার প্রসার ও দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে ফেনী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ১১ কোটি ২০ লাখ ৯ হাজার ৩শ ৭২ টাকা ব্যয়ে সাততলা ভিত বিশিষ্ট একাডেমিক নতুন ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী।
কলেজ কম্পাউন্ড এলাকায় এ ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ফেনী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কাজী মেজবাহুল ইসলাম, ফেনী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইসরাত নুসরাত সিদ্দিকা, কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, প্রকৌশলী, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট লোকজন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সারাদেশে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে ‘কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বর্তমান সরকারের এ উদ্যোগ জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, ফেনীর প্রত্যেক ছেলেমেয়ে যেন পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হতে পারে এবং মা-বাবার লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে পারে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে ফেনীতে শিক্ষা প্রসারে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করছে।
একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার ৭৫’ পরবর্তী কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে আগামী প্রজন্মকে হাতে-কলমে শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। এর ফলে দেশের বেকারত্ব হ্রাস পাবে। প্রশিক্ষিত শিক্ষার্থীদের দেশ ও দেশের বাইরে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। নির্বাহী প্রকৌশলী ইসরাত নুসরাত সিদ্দিকা বলেন, কারিগরি শিক্ষার প্রসার ও দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি হবে জেলার একটি আধুনিক ও উন্নত কারিগরী কেন্দ্র।
ফেনী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কাজী মেজবাহুল ইসলাম জানান, এ ভবন নির্মাণের ফলে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থা, ওয়ার্কসপ ও ল্যাব ব্যবহার করার সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। এ প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে আগামী দিনে শিক্ষার্থীরা দেশের দক্ষমানব সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে। বেকারমুক্ত ফেনী জেলা গড়তে এই প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রাখবে।
ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোসাদ্দেকুল বারি বলেন, দক্ষ জনশক্তি অর্থনীতিতে ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করবে। জনশক্তিকে কারিগরি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে জনসম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে
সচেতনভাবে এগিয়ে আসতে হবে। এটা দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার সঠিক এবং কার্যকর উপায়। দেশকে সমৃদ্ধ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে হলে, জনসংখ্যার বিরাট বোঝাকে অভিশাপ মনে না করে আশীর্বাদ হিসেবে গণ্য করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি শিক্ষার বিস্তারের কোনো বিকল্প নেই। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরাই আমাদের অর্থনীতির
চেহারাটা আরো বদলে দিতে পারে। দেশেতো বটেই, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভালো বেতনে চাকরি নিয়ে যেতে পারে তারা। আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে উপযুক্ত এবং ভালো বেতনে চাকরির সুযোগ পেতে পারে তারা অনায়াসেই। এভাবে আমাদের প্রবাসী রেমিট্যান্স ধারায় বিপুল জোয়ার সৃষ্টি হতে পারে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » ব্যাংক একাউন্ট হ্যাক করে টাকা আত্মসাৎ, গেপ্তার ৩
- » ফেনী বন্ধুসভার ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
- » ইঞ্জিনিয়ার এম. সাখাওয়াত খাঁন’র উদ্যোগে অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ
- » ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর ইফতার ও কমিটি পূণঃগঠন
- » চিপসের টাকা না দেওয়ায় চুরিকাঘাতে যুবক খুন
- » ফেনীতে ৬৬৫ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি
- » মনোয়ার হোসেন সেন্টুর সহযোগিতায় আরডিএস এর ইফতার
- » ফেনীতে প্রাইম ব্যাংক স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
- » ফেনীতে মন্দিরভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকদের তিন দিনের কর্মশালা উদ্বোধন
- » ফেনীতে আল্লাহ তাআলার ৯৯ টি নাম সম্বলিত ইসলামিক ভাস্কর্যের উদ্বোধন