স্টাফ রিপোর্টার :
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা আরও এক ছাত্রীকে তাঁর কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। ছয় মাস আগের ওই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি বিষয়টি ধামাচাপা দেয়।
গতকাল রোববার (৫ মে) ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে ঘটনার শিকার ওই ছাত্রীর সাক্ষী হিসেবে দেওয়া জবানবন্দিতে এই তথ্য উঠে আসে। একই আদালতে আরেক ছাত্রী, মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন ও নৈশপ্রহরী মো. মোস্তফা সাক্ষ্য দেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষ্যে আলিমপড়ুয়া ছাত্রীটি আদালতকে বলেন, ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর সিরাজ উদদৌলা তাঁকে কক্ষে ডেকে পাঠান। তাঁকে মাদ্রাসায় ও পরীক্ষায় নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। বাড়িতে দাওয়াত দেওয়ার জন্যও বলেন। শেষে গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। অধ্যক্ষের এ ধরনের আচরণের বিষয়টি রাতে তাঁর বাবাকে জানান ছাত্রীটি। তাঁর বাবা এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বরাবর লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু পরিচালনা কমিটি বিষয়টি ধামাচাপা দেয়।
এই ঘটনার ছয় মাস পর ঘটল নুসরাতের ঘটনা। ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন দুই তরুণীসহ পাঁচজন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে মারা যান তিনি। এর আগে ২৭ মার্চ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় নুসরাতকে কৌশলে প্রশাসনিক ভবনের (সাইক্লোন শেল্টার) ছাদে নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
নুসরাতের ওপর নৃশংস অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনা ঘটলেও শুরু থেকে সোনাগাজী থানার পুলিশ রহস্যজনক আচরণ করেছিল। বিশেষ করে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন একে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে বিভিন্ন মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠলে থানা-পুলিশের পরিবর্তে ১০ এপ্রিল তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। দায়িত্ব নেওয়ার ৪০ ঘণ্টার মধ্যেই পিবিআই অন্যতম প্রধান দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেনকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর এই মামলার জট খুলে যায়। একে একে গ্রেপ্তার হন প্রায় সব আসামি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, এই মামলার চারজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার নানা অপকর্ম উঠে এসেছে। মামলায় এজাহারভুক্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৯ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”