স্টাফ রিপোর্টার :
সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় দায় স্বীকার করে আরও দুইজন আসামী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন। তাঁরা হলেন- ওই মাদ্রাসার ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইফতেখার উদ্দিন রানা ও ইমরান হোসেন মামুন। সোমবার (৬ মে) বিকেলে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের (সাইক্লোন শেল্টার) তৃতীয় তলার ছাদে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন আগুন দেওয়ার সময় ইফতেখার উদ্দিন রানা ও ইমরান হোসেন মামুন মাদ্রাসার গেইটে পাহারারত ছিলেন। এ সময় তাঁদের সাথে হাফেজ আবদুল কাদের, নুর উদ্দিন এবং শরীফও ছিলেন।
আদালত সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, স্বীকারেক্তিতে তাঁরা বলেছেন, আলিম পরীক্ষার পর থেকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দ্দৌলার সাথে তাঁদের দুইজনের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের সাথেও ভাল সম্পর্ক ছিল। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর ৩০ মার্চ তাঁরা অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মিছিল করেন। ১ এপ্রিল কারাগারের ফটকে অন্যদের সাথে তাঁরাও অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার সাথে দেখা করেন। ৪ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে মাদ্রাসায় একটা সভা হয়। ওই সভায় তাঁরা দুইজনও উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই হত্যার মূল পরিকল্পনা হয়। পরিকল্পনামতে ৬ এপ্রিল পরীক্ষার আগে নুর উদ্দিন, হাফেজ আবদুল কাদের, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন ও শরীফ গেইটে পর্যবেক্ষনের দায়িত্বে ছিলেন।
তাঁরা আদালতকে জানান, নুসরাতকে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নেওয়া ও ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজন অংশ নেয়। এদের মধ্যে তিনজন পূরুষ ও দুইজন মেয়ে ছিল। শাহাদাত, জোবায়ের ও জাবেদ বোরকা পরা ছিল। দুই মেয়ের মধ্যে উম্মে সুলতানা পপি (ছদ্মনাম শম্পা) ও কামরুন নাহার মনি ছিল।
গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে তাঁদের দুইজনকে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে হাজির করা হয়। দুপুরে তাঁদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদেরকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিআইবি‘র পরিদর্শক মো. শাহ আলম উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আসামীরা অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন, তারা হত্যাকান্ড কিভাবে ঘটিয়েছেন তা আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন।
সোনাগাজীর চাঞ্চল্যকর নুসরাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এ দুইজনসহ ১১জন আসামী নুসরাত হত্যাকান্ডে তাঁদের সরাসরি সম্পৃক্ততা ও দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত জাহান রাফিকে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। এর আগে ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যৌন নিপীড়নের ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”