বিশেষ প্রতিনিধি :
ফেনীর দাগনভূঁঞার একটি অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মনগড়া ও ঘটনার বিপরীতে ভুল তথ্য প্রদানের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকার একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই কর্মকর্তা সিআইডি-ঢাকার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজ উদ্দিন। একই সাথে মামলাটি পর্যালোচনার আলোকে সুচারুভাবে ও সরেজমিনে অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই ফেনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্্চ) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২২ আগষ্ট ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের উত্তর নোয়াজপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে আমজাদ হোসেন হাসানকে (১৯) স্থানীয় চানপুর গজারিয়া সড়কের মাথা থেকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। দাগনভূঁঞা থানা পুলিশ অপহৃত আমজাদ হোসেন হাসানকে উদ্ধার ও অপহরণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে দাগনভূঁঞা থানায় মামলা করেন। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা দাগনভূঁঞা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোবারক হোসেন ভিকটিম ও দুইজন সাক্ষীর ১৬১ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেন। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পান। মামলাটি সিআইডি-ঢাকায় হস্তান্তরের পর সিআইডি উপ-পরিদর্শক মো. সিরাজ উদ্দিনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
সিআইডি উপ-পরিদর্শক মো. সিরাজ উদ্দিন তাঁর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন- আসামীগণ ক্রিকেট খেলা নিয়ে বাজী ধরায় ভিকটিমের নিকট ৩০ হাজার টাকা পাওনা থাকায় ভিকটিমের কাছে টাকা দাবি করায় এ মামলা হয়েছে। কোন অপহরণ বা আটকের ঘটনা ঘটেনি।
অপরদিকে আদালতের এজলাশে দুইজন আসামী আশ্রাফুল ও কাউছার আজম সাব্বির জানান, পাঁচ হাজার টাকা পাওনা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। বাজীর কোন ঘটনা নেই। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা দাগনভূঁঞা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোবারক হোসেন ২০১৯ সালের ২৮ আগষ্ট ভিকটিম ও দুইজন সাক্ষীর ১৬১ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেন। কিন্তু ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়নি।
সিআইডির তদন্তে ভিকটিমের এরুপ বক্তব্যের কোন পর্যালোচনা নেই। ভিকটিমের পুনরায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়নি। সাক্ষী ও ভিকটিম এজাাহারও ঘটনাকে সমর্থন করে। কিন্তু সিআইডির দাখিলীয় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উক্ত তদন্তের বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা বা পর্যালোচনা নেই।
মামলার দ্বিতীয় কর্মকর্তা সিআইডি উপ-পরিদর্শক মো. সিরাজ উদ্দিন সম্পূর্ণ মনগড়া ও ঘটনার বিপরীত একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি ও আঘাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও সিআইডি পুলিশের ন্যায় একটি স্বতন্ত্র সংস্থা এ ধরনের খামখেয়ালী ও মনগড়া তদন্ত সম্পূর্ণরুপে অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। এ অবস্থায় দাখিলীয় চূড়ান্ত রিপোর্ট তথ্যগত ভুল থাকায় ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে গ্রহণ করা হয়নি।
এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ২য় কর্মকর্তা অর্গানাইজড ক্রাইম হোমিসাইডাল (স্কোয়াড) সিআউডি উপ-পরিদর্শক মো. সিরাজ উদ্দিনের (বিপি নং ৮৩০৩০৭৭৫৮২) বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সাথে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি পিবিআই-ফেনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ জাকির হোসেন উপরোক্ত তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”