বিরলী-ভগবানপুর সংযোগস্থলে দীর্ঘ সাত বছরের অচলাবস্থার অবসান
মেজবাহ মুকুল
দীর্ঘ সাত বছরের অবসান ভেঙ্গে অবশেষে এক কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিরলী-ভগবানপুর গ্রামের সংযোগস্থল করের ছড়া খালের উপর সেতুটি। গত সোমবার সেতুটি নির্মাণের জন্য ঢাকায় অনলাইনে টেন্ডার ড্র অনুষ্ঠিত হয়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাগব হবে। এই খবরে এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তির নিঃশ^াস বইছে।
পূবের সেতুটি ভেঙ্গে ২০১৬ সালে নতুন সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হলেও বরাদ্দ কম হওয়ায় সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এই সেতুর বাজেট চলে যায় পাশের গ্রামের খালের উপর। ফলে ভগবানপুরবাসীর ফেনীসহ আশেপাশের এলাকাতে যোগাযোগ অনেকটা বন্ধ হয়ে যায় । এ নিয়ে তখন দৈনিক অজেয় বাংলা পত্রিকায় লেখালেখি হলে ফেনী জেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ চৌধুরী ও ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল সরেজমিন পরিদর্শনে যান এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ে ভগবানপুর সেতুটি নির্মাণের আশ্বাস দিতে থাকে। এ আশ্বাস শেষ পর্যন্ত সাত বছরে গিয়ে বিশ্বাসের নাগাল পায়। এবার সে বিশ্বাস বাস্তবায়নের রূপ দেখতে চায় এলাকাবাসী।
সেতুটি নির্মাণের কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এলাকার মো. সুমন বলেন, সেতু নির্মাণের খবর শুনে খুব আনন্দ লাগছে। দীর্ঘ সাত বছর কিযে কষ্ট করেছি এই সেতু নিয়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিদিন আমার মেয়েকে বিরলী স্কুলে নিয়ে যাই। সেতুটি ভাঙা থাকায় ওপারে মোটর সাইকেল ওপারে রেখে এসে মেয়েকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নিয়ে যেতাম। আবার স্কুল ছুটি হলে ওপারে মোটর সাইকেল রেখে মেয়েকে বাড়িতে রেখে আসতাম। এই সাত বছর আমি এই কষ্টটা করেছি। শুধু আমি একা নই। এলাকার সব মানুষ একই কষ্ট করেছে। সেতুটি নির্মাণ হলে আমরা সাত বছরের কষ্ট ভুলে যাবো।
আলাউদ্দিন বলেন, সেতুটি না থাকায় আমরা একেবারে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলাম। ফেনী ও আশেপাশের এলাকা বিরলী, রাজাপুর, দরবেশের হাটের সাথে আমাদের গ্রামের যোগাযোগ অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। ভগবানপুর থেকে বিরলী মাত্র ২ কি: মি: পথ। কিন্তু সংযোগ সেতু না থাকায় বিরলী যেতে আমাদের লক্ষীয়ারা ঘুরে তালতলা হয়ে পাড়ি দিতে হয় অন্তত ৫/৬ কি: মি: পথ। সেতুটি নির্মাণ হলে আমাদের এ কষ্ট আর থাকবে না।
প্রবাসী মো. সেলিম বলেন, সেতুটি নির্মাণের কথা শুনেছি। আমি কর্তৃপক্ষ ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ এ সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় আমাদের দুর্ভোগের শেষ ছিল না এবং তা বর্ণনাতীত। বিদেশ থেকে এসে আমি থ হয়ে যাই। বাড়িতে একটি সিএনজি নিয়ে প্রবেশ করা যায় না। করের ছড়ার মাথা থেকে মালামাল মাথায় বয়ে নিতে হয় বাড়িতে। এখানে আগে রিকশা চলাচল করতো সেতু না থাকায় এখন রিকশাও পাওয়া যায় না। যা আসে ছড়ার দক্ষিণ মাথায় থাকে। এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের কষ্ট ছিল সীমাহীন।
এ প্রসঙ্গে ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ভগবানপুর এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের সমস্যা দূর করার লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদের পিআইও অফিসের তহবিল হতে এক কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আমি আশা করছি সহসা সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে এবং ভগবানপুরবাসীর কষ্ট দূর হবে।
পাঁছগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন বলেন, ভগবানপুর সেতুটি নির্মিত হোক এটি আমার ও গ্রামবাসীর দীর্ঘ দিনের আশা। অনেক বছর ধরে ভগবানপুর সেতুটির নির্মাণ কাজ ঝুলে ছিল প্রশাসনিক নানা জটিলতায়। এছাড়া সেতুটি নির্মাণের জায়গায় পাতালের সমস্যাও ছিল। এখন সেতুটি নির্মাণের জন্য এক কোটি দুই লাখ টাকার টেন্ডার হয়েছে। তিনি সেতুটি নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়ায় ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীলের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”
- » ফরহাদনগরে ছাত্রদল নেতা জিয়া উদ্দিনের ভয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে পথে ঘুরছে বৃদ্ধা দুই অসহায় বোন