ফেনীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সুজন এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
আর বিভাজনের রাজনীতি নয়, ঐক্য চাই
বিশেষ প্রতিনিধি,
বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর তায়বুল হক বলেন, “শিরদাঁড়া সোজা থাকলে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারি। সবার শিরদাড়া সোজা নয়। যেই দেশে ইলেকশান ইলেকশান খেলা হয়েছে। ইলেকশান কমিশনের শিরদাড়া ছিলোনা। যদি থাকতো তাহলে আজকের এই অবস্থা হতো না। দোর্দন্ড প্রতাপশালী সরকার পতনের পর গ্রাম বাড়ি পর্যন্ত এইভাবে এত লোক পালিয়ে যেতে হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির জানা নেই। আমরা দীর্ঘদিন বিভাজনের রাজনীতিতে ছিলাম। এই দেশ-জাতিকে সঠিক পথে নিতে হলে বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে ঐক্যের রাজনীতিতে যেতে হবে।”
মঙ্গলবার বিকালে সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক এর ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। শহরের ট্রাংক রোডের প্রধান সড়কে শোভাযাত্রা শেষে ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুজন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এনামুল হক খন্দকার, নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের প্রাক্তণ অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মলয় কান্তি চক্রবর্তী, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সদ্য নিযুক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মেজবাহ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, জামায়াতে ইসলামীর জেলা প্রচার সম্পাদক আ.ন.ম আবদুর রহীম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি পার্থ পাল চৌধুরী, প্রথম আলো প্রতিনিধি আবু তাহের, সংগ্রাম প্রতিনিধি একেএম আবদুর রহীম, ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শুকদেব নাথ তপন।
সুজন ফেনী পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমন উল হকের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সহকারি অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম সরকার, স্টার লাইন গ্রুপের পরিচালক মাঈন উদ্দিন, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহআলম বাদল, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন চৌধুরী, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মহিউদ্দিন খন্দকার, শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইকবাল আলম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক ওসমান গনি রাসেল।
প্রফেসর তায়বুল হক আরো বলেন, “মানুষ যখন ক্ষুদ্ধ হয়, প্রতারিত হয়, অধিকার বঞ্চিত হয়, এরকম হতে হতে একপর্যায়ে ক্রুদ্ধ হয়। মানুষ ক্রোধের বহি:প্রকাশ ঘটায় যখন গর্তে আবদ্ধ হয়। তখন মানুষ বিবেক তাড়িত না হয়ে আবেগ তাড়িত হয়। যখন মানুষ আবেগ তাড়িত হয় তখন মানুষ যে কোন কাজ করে ফেলতে পারে। আমরা ১৯৭১ পর্যন্ত দীর্ঘদিন বিভিন্নভাবে নির্যাতিত, বঞ্চিত হওয়ার পর যে ক্রোধ জমেছিল সে ক্রোধ জমেছিল আবেগে, আবেগ থেকে ৭১ সৃষ্টি হয়েছিল। ৩০ লক্ষ প্রাণ দিতে কেউ কার্পণ্য করেনি। কার আগে কে প্রাণ দিবে তা নিয়ে টানাটানি ছিল। ২০২৪ সালে ১৬ বছরের নির্যাতনে এত ক্রোধ জমেছিল যে, ভোটের অধিকার, সম্মান সহ সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হতে এমন হয়, যার বহি:প্রকাশ আমরা দেখতে পাই। যেখানে আবু সাঈদসহ দুই হাজার মানুষ জীবন দিতে হয়েছে। তবে আমি বলবো, আবেগ দিয়ে সরকার পতন হয়, রাষ্ট্র পরিচালনা করা যায় না। বিবেক-মস্তিস্ক দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হয়।”
তিনি আরো বলেন, “একটা দেশ একটা জাতি তেমন সরকারি পায় তারা যে রকম সরকার পাওয়ার জন্য উপযোগী। জাতি যদি সচেতন না থাকে তখন সে জাতির জন্য ওই রকম সরকারে শাসন করে থাকে। আর যেসময় সচেতন হয় তখন পরিবর্তন হয়। আর সচেতন হয়েছে বলেই পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের দেশে সঠিক ইলেকশন ছিল না বলেই এভাবেই জবরদখল করে জগদ্দল পাথরের মত আমাদের উপর শাসন নেমে এসেছিল। আরেকটা বিষয় হলো ভয় দেখিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না। ভয় দেখিয়ে শাসন করা যায় না।”
এসময় অন্যদের মধ্যে নবনিযুক্ত অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদ, ফেনী সরকারী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ফরিদ আলম ভূঞা, সাবেক সম্পাদক জহির উদ্দিন, যুগ্ম-সম্পাদক আহমেদ আলী বিভোর, প্রভাষক মামুনুর রশিদ, মঞ্জুরুল হাসান রুমি ও ইসতিয়াক উদ্দিন, দৈনিক স্টার লাইন সহযোগি সম্পাদক জসিম মাহমুদ, ফেনী জেলা প্রাইভেট হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন অর রশিদ, লালন একাডেমীর সভাপতি মোহাম্মদ উল্যাহ, ক্রীড়া সংগঠক তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, শহর ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান সোহেল, একাত্তর টিভি প্রতিনিধি নুরুজ্জামান সুমন, আমার সংবাদ প্রতিনিধি এসএম ইউসুফ আলী, অজেয় বাংলা নির্বাহী সম্পাদক শাহজালাল ভূঞা, সোনাগাজী প্রেস ক্লাব সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ফেনী সাইক্লিস্টের সভাপতি আল আমিন, বিডি ক্লিনের সমন্বয়ক ফয়সাল হাসান অপু, সুজন নেতৃবৃন্দের মধ্যে আঞ্চলিক সমন্বয়ক সৈয়দ নাছির উদ্দিন, কো-অর্ডিনেটর বিবি খাদিজা, ফেনী পৌর সভাপতি জাহিদ হোসেন বাবলু, জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ খোরশেদ আলম বাবলু, ফুলগাজী উপজেলা সভাপতি জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, ছাগলনাইয়া উপজেলা সভাপতি কামরুল হাসান লিটন, দাগনভূঞা উপজেলা কোষাধ্যক্ষ কাজী ইফতেখার প্রমুখ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
“রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি করুন” প্রতিপাদ্য সামনে রেখে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। এরপর ট্রাংক রোডের প্রেস ক্লাব চত্ত্বর, মডেল থানা প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিন করে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গিয়ে শোভাযাত্রা শেষ হয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”