বিশেষ প্রতিবেদক:
বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম ও ঘৃণিত শাসক বলেছেন।
শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গণহত্যায় জড়িত এটা এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও প্রমাণিত।
আওয়ামী লীগের ইতিহাস পলায়নের ইতিহাস। তার পিতাও স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। ৬৯ সালেও মাত্র ১৭ ঘন্টায় একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন তার পিতা।
পরবর্তীতে শেখ হাসিনাও ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিনের ভোট রাতে এবং আমি আর ডামি নির্বাচনের নামে
একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েম করেছিলেন। তাকে এদেশের মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন।
অন্তবর্তী কালীন সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনুন।মানুষ সংস্কার বুঝেনা,তারা সংসার বুঝেন।অতএব, সংস্কার সংস্কার করে সময় ক্ষেপণ করবেন না।আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখুন।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতিরোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার ও দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ ৪দফা দাবীতে ফেনীর মিজান ময়দানে জেলা বিএনপির জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সাংসদ জয়নাল আবেদীন ভিপি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রাম বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ, সহ- প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহেনা আক্তার রানু, সদস্য আবদুল লতিফ জনি, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন, জালাল উদ্দীন মজুমদার, এডভোকেট শাহানা আক্তার শানু,আবু তালেব,কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব।
ফেনী জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক এয়াকুব নবী ও আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারীর যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল,যুগ্ম আহবায়ক এম এ খালেক, যুগ্ম আহবায়ক গাজী হাবিব উল্যাহ মানিক।এসময় তাঁরা বলেন,৭১ সালে আমরা যে উদ্দেশ্যে দেশ স্বাধীন করেছিলাম তার ৪মাসের এক নেতার এক দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ কায়েম করে তা নস্যাৎ করা হয়েছিল। এবারও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে নির্বাচনের কথা বলতে হচ্ছে।এজন্য ডিসেম্বরের পর আর কোনো সময় দেওয়া সম্ভব নয়।
সংস্কার করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা যাবে না।যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে না।আমরা রাজপথ ছেড়ে যাবো না।
এখন যারা মুখে ধর্মের কথা বলে,তাদের অন্তরে মুনাফেকি। বিএনপিকে কেউ ভয় দেখাবেন না।প্রয়োজন হলে আবারও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ ফেলে আমাদের নেতাকর্মীরা রাজপথে নামতে প্রস্তুত রয়েছে। গত ১৬ বছর যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের ৯০ ভাগই বিএনপির। স্বৈরাচারদের পক্ষে কেউ মামলায় লড়বেন না।তাদেরকেও চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
ফেনীতেও হাসিনার সন্ত্রাসী নিজাম উদ্দিন হাজারী,আলাউদ্দিন নাসিম, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গুম,খুন ও নির্যাতন করেছে। তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমানিত হয়েছে। দুনিয়াতে মহান আল্লাহর বিচার হয়েছে।এখন শেখ হাসিনা ও ফেনীর নিজাম হাজারীসহ আওয়ামী খুনিদের দ্রুত বিচার ও নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে,কিছুতেই স্থানীয় নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনের আগে নয়।
আয়না ঘরে যে চেয়ারে বসিয়ে হাসিনা বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে।সেই চেয়ারে বসিয়েই ওই ফ্যাসিস্টকে একই কায়দায় উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।যারা সংস্কার চাচ্ছেন,তাদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি নেতারা বলেন, আপনারা আমাদের নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বসেন।সংস্কার কাকে বলে তিনি দেখিয়ে দিবেন।
দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এর সমাধান সম্ভব নয়।বিগত ১৭ বছরের গুম-খুনের নায়িকা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অনেক হিসাব বাকি রয়েছে।এখনও তার দোসররা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে বসে আছে। এদের খুঁজে বের করতে হবে।না হলে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত করা সম্ভব হবে না।
একটি দল জুলাই বিপ্লবে বিএনপির অবদানকে ছোট দেখার অপচেষ্টা করছে।অথচ,ওই দলটি বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করে ১৮টি আসন পেয়েছিল,আর এককভাবে করে পেয়েছিল মাত্র ৩টি আসন।আমরা তাদেরকে বলবো পূর্বের কথা মনে রেখে সামনে চলার চেষ্টা করবেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, ‘তোমরা যে আকাঙ্খা নিয়ে মাঠে নেমেছিলে সেখান থেকে সরে গিয়ে দল গঠন ও সংস্কার নিয়ে ব্যস্থ।দ্রব্যমূল্যর উর্ধ্বগতি ও দেশের মানুষের কথা ভুলতে বসেছো।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন ছাগলনাইয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুর আহমদ মজুমদার, সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফজলুর রহমান বকুল, সদস্য সচিব আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির, পৌর বিএনপির আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন বাবুল,সদস্য সচিব এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূইয়া,জেলা যুবদলের আহবায়ক নাসির উদ্দীন খন্দকার,সদস্য সচিব নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত,জেলা মহিলা দলের সভাপতি জুলেখা আক্তার ডেইজি,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাহ উদ্দিন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম মিলন,পরশুরাম উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুল হালিম মানিক প্রমূখ।
তৃণমূলের এসব নেতারা তাদের বক্তব্যে বলেন, যেখানে আওয়ামী লীগ, সেখানেই প্রতিরোধ।শহীদ জিয়ার একটি সৈনিক বেঁচে থাকতে আওয়ামী শয়তানদের এদেশে আসতে দেয়া হবে না।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”