মিসবাহ মুকুল :
এই তো বছর দশেক আগের কথা। রমজান মাসে পাড়ায় দেখা গেছে একদল সৌখিন ছেলেপুলেদের। রাস্তার পাশে সামীয়ানা টানিয়ে ঈদ কার্ডের পসরা সাজিয়ে বসেছে। প্রিয়জনদের নিমন্ত্রণ আর শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাতে মানুষের আনাগোনায় সরব থাকতো এসব দোকান। বাহারি রঙের কার্ড থাকতো। থাকতো কাবা, মসজিদ, মিনার, ফুল, পাখি, প্রজাপতি খচিত প্রভৃতি নান্দনিক ছবি। বড় অক্ষরে লেখা থাকতো ‘ঈদ মুবারাক’ আরবি, বাংলা ও ইংরেজিতে। ভিউ কার্ড থাকতো নায়ক-নায়িকা ও খেলোয়াড়দের। শিশুদের কার্টুন স্টিকার থাকতো ছোট ছোট। মনোরম দৃশের ঈদ কার্ড নিমন্ত্রনের জন্য পাঠানো হতো প্রিয়জনকে। প্রথম নিমন্ত্রণ জানাবে কে কাকে তার একটি ব্যতিব্যস্ততা থাকতো সবার মাঝে। মজার মজার ছন্দে ছড়ায় খুদে বার্তা লেখা থাকতো কার্ডে, “ঈদের দাওয়াত তোমার তরে/ আসবে তুমি আমার ঘরে/ কবুল করো আমার দাওয়াত /না করলে পাবো আঘাত/ তখন কিন্তু আড়ি/ যাবো না তোমার বাড়ি”
এখনকার প্রজন্ম এসব জানেই না ভাবলেই আশ্চর্যান্বিত হবার কিছু নেই। বিবর্তন প্রক্রিয়ায় যুগ এগিয়েছে। এসেছে আকাশ সংস্কৃতি। এনেছে নতুন নতুন সামাজিক যোগাযোগের অত্যাধুনিক মাধ্যম। আমরা প্রত্যেকেই এখন ঈদের শুভেচ্ছ বার্তা পাঠাই এসব মাধ্যমে। মোবাইল ফোনে এসএমএস লিখে। শুভেচ্ছা শেয়ার করা হয় ইমেইল, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবার উল্লেখযোগ্য এসব মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগের বড় জনপ্রিয় একটি মাধ্যম এখন ফেসবুক। একটি স্ট্যাটাস অথবা ‘ঈদ মুবারাক’ লিখিত একটি ছবি আপলোড করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো যায় খুব সহজে। লাইক, লাভ অন্যান্য ইমোটিকোন বা কমেন্টের মাধ্যমে প্রিয়জনের সাড়া পাওয়া যায় সরাসরি। সেই বার্তায় মিলিত হয়ে সেলফি দেখা যায় ফেসবুকে। ঈদ কার্ড না পাওয়াকে কেন্দ্র করে মান অভিমানও দেখা যেতো কিছু প্রিয়মুখে। আকাশ সংস্কৃতির সাথে তাল মেলাতে গিয়ে ঈদ কার্ড এখন হারিয়েছে কালের গর্ভে। এ প্রজন্ম তো বেড়ে উঠেছে আকাশ সংস্কৃতির সাথে। মায়ের কাছে গল্প শুনে জেনেছে ঈদ কার্ড কি। ফেনির বড় বড় প্রেসগুলো ঈদ কার্ড ছাপানোয় দম ফেলার সুযোগ মিলতো না। প্রচুর ভিড় থাকতো। এখন নেই মানুষের আনাগোনা। খবর ও নেয় না কেউ। ঢাকায় পল্টনে ঈদ কার্ড প্রস্তুতকারী বড় একটি প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রোডাক্ট। সারাদেশে তারা একসময় কার্ড সাপ্লাইয়ার হিসেবে ছিল শীর্ষে। প্রযুক্তির ব্যবহারে এখন তারাও দমে গেছে। জীবনযাত্রার মান সংক্ষেপ হয়ে গেছে আকাশ সংস্কৃতির কাছে। কিছু বড় বড় প্রতিষ্ঠান একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানাতে বিশেষভাবে কিছু কার্ড তৈরি করে থাকে এখনো। এছাড়া আগের মতো সবার হাতে হাতে ঈদ কার্ড দেখাই যায় না।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”